দৈনন্দিন সঙ্গীর গল্পগাথা নিয়ে হাজির হিন্দুস্থান ক্লাব, কৃষকদের প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছে সমাজসেবী সংঘ

0

দৈনন্দিন সঙ্গীর গল্পগাথা নিয়ে হাজির হিন্দুস্থান ক্লাব, কৃষকদের প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছে সমাজসেবী সংঘ

কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার বারোয়ারি দুর্গাপুজো মানেই একদিকে থিমের চমক এবং অন্যদিকে সেই সাবেকিয়ানা, দুইয়ের যেন সুন্দর সংমিশ্রণ লক্ষ্য করা যায়। ত্রিধারা অকালবোধনের থিমের চমকের পাশাপাশি একডালিয়া এভারগ্রিনের সাবেকিয়ানা জানান দেয় শারদোৎসবে সেরা 'দক্ষিণ কলকাতা'। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবারের দুর্গাপুজো কিছুটা আলাদা। কিন্তু তবুও কাতারে-কাতারে মানুষ আসছেন মণ্ডপ দর্শন করতে, মনে হতাশা থাকলেও উমাকে একবার দেখতে হাজির আট থেকে আশি সকলেই।

     প্রসঙ্গত, গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাবের এবছরের থিম 'বন্ধনহীন গ্রন্থি'। শিল্পী শিবশঙ্কর দাসের ভাবনায় ফুটে উঠেছে হিন্দুস্থান ক্লাবের এবারের পুজো মণ্ডপ। এ বিষয়ে পুজো উদ্যোক্তারা জানান,  রাজপথ থেকে গলি, মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবলম্বন হিসেবে পথের যান সঙ্গী রয়েছে। যে বায়ু দূষণ মুক্ত যান রাজপথ থেকে গলিপথ ধরে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন অনবরত। সেই রিক্সা, রিক্সাওয়ালা এবং তার ইতিহাসই গড়িয়াহাট হিন্দুস্থান ক্লাবের এবছরের পুজোর গল্পগাথা। এবছর হিন্দুস্থান ক্লাবের প্রতিমা তৈরি করেছেন শিল্পী অরিগ্ন সাহা।

    এর পাশাপাশি, দক্ষিণ কলকাতার আরও এক নামী পুজো হিসাবে পরিচিত সমাজসেবী সংঘ। বিশ্বায়ন এবং নগরসভ‌্যতা যে ভয়ঙ্কর ভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মূল প্রবাহকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে কৃষিকে আঁকড়ে ধরেই এই পুজোর ভাবনা। মণ্ডপজুড়ে শিল্পী রাজু সরকার ফিরিয়ে এনেছেন সেই হারিয়ে যাওয়া মাটির ঘ্রাণ, ঢেঁকির তাল, জলের গান এবং কৃষিনির্ভর জীবনের সার্থকতা। বিশেষভাবে দেবী প্রতিমার গয়না থেকে শুরু করে শাড়ি এবং সমস্ত অঙ্গেই আউশ ধানের সোনালি গোছায় অলংকার সামগ্রী গড়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই অনন্য ভাবনার মাধ্যমে।

    এ বিষয়ে সমাজসেবী সংঘের থিম শিল্পী রাজু সরকার জানিয়েছেন, ‘আর করব না চাষ/ দেখি তোরা কী খাস?’ মূলত, চাষির ছেলে পড়াশুনা শিখতে এসে আর গ্রামে ফিরছে না। শীতাতাপ ফ্ল‌্যাটে ঢুকে ভুলে যাচ্ছে সেই গ্রামের মাটি ও পরিবারকে। উল্টোদিকে, নবপত্রিকার পুজো করেও নগরবাসীরা দ্রুত ঢুকে পড়ছেন এসি রুমে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই ভুলে যেতে বসেছেন সেই শস‌্য বিনা প্রাণ ধারণ করা একেবারেই অসম্ভব। কৃষকের ঘাম ও রক্ত দিয়ে তৈরি এক একটি দানা যুগ যুগ ধরে মানুষের অস্তিত্বকে বহন করে চলেছে। 


Article by: 
শুভদীপ রায় চৌধুরী

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)