সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে পুজো দিয়েই দীপান্বিতার প্রস্তুতি শুরু করেন শান্তিপুরবাসী

0

সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে পুজো দিয়েই দীপান্বিতার প্রস্তুতি শুরু করেন শান্তিপুরবাসী

শান্তিপুর: সামনেই দীপাবলি, আলোর উৎসবে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। কলকাতা কালীক্ষেত্র হলেও বঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু প্রাচীন কালীমন্দির রয়েছে, যেখানে নিষ্ঠার সঙ্গে আজও পুজো হয়। তবে কালীপুজোর আমেজ উপভোগ করতে আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে নদিয়ার শান্তিপুরে। যেখানে রাস উৎসবের পাশাপাশি কালীপুজো ধুমধাম করে অনুষ্ঠিত হয়। এই পীঠস্থানে বহু প্রাচীন বিগ্রহ মন্দির রয়েছে, এগুলি বহু ইতিহাসের সাক্ষী। তেমনই একটি প্রাচীন মন্দির হল সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির।

   প্রসঙ্গত, নদীয়ার শান্তিপুর একটি সুপ্রাচীন জনপদ, বহু ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান এবং গঙ্গার তীরবর্তী জনপদ হিসাবেও শান্তিপুর পরিচিত। এছাড়া উল্লেখযোগ্য যে, তন্ত্রসাধক সার্বভৌম আগমবাগীশের আগমেশ্বরী, দেখতে ভিড় জমান বহু ভক্ত। তেমনই এই  সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরও এক ঐতিহাসিক স্থান।এই কালীমন্দির তৈরি করা হয় ১৬০৬ সালে। বর্তমানে প্রায় চারশো বছরেরও প্রাচীন এই মন্দির। তৎকালীন রাজা ভবানন্দ মজুমদার( মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঠাকুরদাদা), তিনি পার্বতীচরণ মুখোপাধ্যায় মতান্তরে ফকিরাচাঁদ মুখোপাধ্যায়কে এই মন্দিরের দায়িত্ব তুলে দেন। বলাবাহুল্য, এই মুখোপাধ্যায় পরিবারের আদি পদবী ওঝা(কৃত্তিবাসের বংশধর) মন্দিরের বার্ষিক পূজা হয় দীপান্বিতা কালীপূজায়। এছাড়া অক্ষয়তৃতীয়া কিংবা বিভিন্ন উৎসবে মন্দিরে দর্শনার্থীর ভীড় দেখবার মতন।

   উল্লেখ্য, শান্তিপুরে যে কটি কালীপুজো হয় এই সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে পুজো দিয়েই তা  শুরু হয়। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সামনে যে নাটমন্দির রয়েছে, তা তৈরি করা হয় পরবর্তী সময়ে, তৈরি করেন সরকার বাড়ির সদস্য। অতীতে সিদ্ধেশ্বরীর মাটির বিগ্রহ ছিল। তবে বর্তমানে পাথরের মূর্তিতেই পুজো করা হয়। এই বিগ্রহ তৈরি করা হয়(১৩৮৭ বঙ্গাব্দে), সুদূর কাশী থেকে নিয়ে আসা হয় এই মূর্তি। 

   উল্লেখ্য, প্রতিবছরই দীপান্বিতা  কালীপুজোয়রাত ১১.৪০মিনিটে বিশেষ পুজো শুরু হয়, আর শেষ হয় পরের দিন ভোর ৪টে। অতীতে বলিদান হলেও বর্তমানে বন্ধ রয়েছে এই প্রথা। প্রায় ৫০কেজি কিংবা তারও বেশি চালের ভোগ নিবেদন করা হয় সিদ্ধেশ্বরীকে। ভোগে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, সাদাভাত, পায়েস, লুচি, ভাজা, সুজি, মাছ, তরকারি, চাটনি ইত্যাদি, সঙ্গে দীপাবলীতে হোমও হয় এই মন্দিরে। দীপাবলির রাতে মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। পরের দিন সকালে ভোগ বিতরন করা হয় এবং প্রায় হাজার ভক্ত বসে প্রসাদ খায় মায়ের মন্দিরেই।

Article by: শুভদীপ রায় চৌধুরী

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)